প্রবল তুষার ঝড় হয় লাল গ্রহ মঙ্গলে? আর সেই ঝড় কি রোজই হয় ভোর রাতে?
তেমনই একটা সম্ভাবনার কথা হালে জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে, বিজ্ঞানীদের অনুমান, সেই বরফের পরিমাণ তেমন কিছু বেশি নয়, যা দিয়ে বরফের পুতুল তৈরি করা যাবে, বা রাস্তা বানানোর জন্য সেই বরফ কাটতে হবে! এমনকী, মঙ্গলে পা রাখলে বরফের জন্য বিশেষ জুতোরও প্রয়োজন হবে না। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন ফ্রান্সের পিয়ের কুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
পৃথিবীর থেকে মঙ্গলের ঠান্ডা অনেকটাই বেশি। তাপমাত্রা কম-বেশি মাইনাস ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। এই মারাত্মক ঠান্ডায় বরফ গলে জল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। গবেষকরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের যেহেতু বেশির ভাগটাই উড়ে গিয়েছে (মঙ্গলের অভিকর্ষ বল অনেক কম বলে), তাই তার বায়ুমণ্ডল খুব পাতলা। ফলে, সূর্যের তাপে পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি তেতে ওঠে ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলের পিঠ। তাই যদি সামান্যতম জলও থাকে মঙ্গলের পিঠে, তা হলেও খুব তাড়াতাড়ি তা উবে যাবে। সেই উবে যাওয়া জল উপরে উঠে জমে গিয়ে বরফ হয়। সেই বরফের টুকরোগুলো মঙ্গলের মেঘে ভেসে বেড়ায়। মেঘ ভারী হয়ে গেলে বরফের টুকরোগুলো ভোর রাতে নেমে আসতে থাকে মঙ্গলের বুকে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মঙ্গলে মেঘ থেকে বরফ ঝরে পড়ে (তুষারপাত) অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। ৫-১০ মিনিটেই তা মঙ্গলের মাটির ১-২ কিলোমিটার অঞ্চল ভরিয়ে দেয়। আগে জানা ছিল, তা হতে লেগে যায় কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন। মেঘে তুষার মিশে যাওয়ায় আবহাওয়া সামান্য ভেজাভেজাই থাকে বলা চলে। গবেষকদলের অন্যতম সদস্য আইমেরিক স্পাইগা জানিয়েছেন, মঙ্গলের ধুলোর আস্তরণের নিচে রয়েছে বরফ।
মঙ্গলে রাতের আকাশে পর্যবেক্ষণের কাজ চালাচ্ছে এক জে়াড়া কৃত্রিম উপগ্রহ। লাল গ্রহের উত্তর মেরু এলাকার মেঘ থেকে বরফ পড়ার খবর মিলেছে দু’টি উপগ্রহ থেকেই।
- সূত্রঃ আনন্দবাজার।
ছবি সংগ্রহঃ নাসা।