ইন্টারনেট আজ পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে । দুরদুরান্তের খবর পেতে ও পাঠাতে সহায়তা করছে ইন্টারনেট । টাকা লেনদেন থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় তথ্য আদান প্রদান সবই ইন্টারনেট কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে । যতই প্রযুক্তির উন্নতি ঘটছে ততই এতে নিরাপত্তা নিয়ে কথা উঠছে । যখন ব্যবহারকারী একটি ইমেইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাঠায় তখন হাজার হাজার সার্ভার ঘুরে মেইলটি গন্তব্যে পৌঁছায়।
গতিপথের প্রত্যেকটি সার্ভারে এক-একটি নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে।
এর জন্য প্রয়োজন পরিচয় নিশ্চিতকরন , শুধু ইমেইল না, অনলাইনে লেনদেন করতে হলে দরকার এমন ব্যবস্থা যাতে অনলাইনে তথ্য প্রদানকারী, আবেদনকারী সবার পরিচয় 'প্রমাণযোগ্য' এবং নিশ্চিত হয়; একজনের শনাক্তকরণ চিহ্ন যাতে অন্যজন ব্যবহার করতে না পারে, যেমন ইমেল বা অনেক সাইট এ লগ ইন এর সময় ভ্যারিফিকেশনের জন্য প্রশ্ন বা নাম্বার দেয়া হয় যাতে এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে সাইটে প্রবেশকারী ব্যাক্তিই আসল ব্যাক্তি । এবং এর সাথে সাথে প্রয়োজন হয় , তথ্য/পরিচিতি হাতছাড়া না হওয়ার নিশ্চয়তা।
এসব কিছুর একটি সহজ সমাধান হলো ইলেক্ট্রনিক বা ডিজিটাল স্বাক্ষর ও ডিজিটাল সার্টিফিকেট ।
ডিজিটাল স্বাক্ষর হলো তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় যাচাইয়ের একটি পদ্ধতি। এটি নিশ্চিত করে তথ্যটি যিনি পাঠিয়েছেন তার সেটি পাঠানোর কর্তৃত্ব আছে কি না, যাত্রা পথে তথ্যটিতে কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না।
ডিজিটাল সার্টিফিকেট হলো তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে দাতা কিংবা গ্রহীতা অথবা উভয় প্রান্তে ব্যবহৃত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের একটি ইলেক্ট্রনিক প্রত্যয়ন ব্যবস্থা। অনলাইনে ডিজিটাল সার্টিফিকেট প্রদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সেবাগ্রহণের সময় সেবাদাতা সংস্থার কোনো ত্রুটির জন্য তার কোনো তথ্য পাচার হয়ে যাবে না।
ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতির কার্যক্রম নিরাপত্তার নিশ্চিতকরণে বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত ও স্বীকৃত । এই হিসেবে বাংলাদেশে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল সার্টিফিকেট ব্যবস্থা স্থাপন করে। বাংলাদেশে এখন ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যাবস্থার কিছু কিছু কার্যক্রম শুরু হয়েছে । ডিজিটাল স্বাক্ষর ও ডিজিটাল সার্টিফিকেট ব্যাবস্থার কিছু সুবিধা রয়েছে ,
১। ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবস্থা চালু করা গেলে বাংলাদেশে ই-কমার্স চালু হবার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা অপসারিত হবে;
২। অনলাইনে নানা রকমের লেনদেন করা যাবে; অনলাইনে কেনা-কাটা করা যাবে, টেন্ডারবাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে;
৩। কর দেয়া সহজ হবে, ফলে করদাতার সংখ্যা বেড়ে যাবে; দরখাস্ত জমা দেয়ার জন্য স্বশরীরে অফিসে হাজির হতে হবে না;
৪। সরকারের সঙ্গে অনেক লেনদেন দেশের যে কোন স্থান থেকে করা যাবে; দাপ্তরিক পর্যায়ে কাগজের ব্যবহার হ্রাস পাবে,
৫। নথিতে নোট লিখে সই করার পরিবর্তে ই-ফাইলে কাজ করা যাবে; যেহেতু ডিজিটাল সনদ ও ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যতীত টাকা
৬। পয়সা অনলাইনে বিনিময় হবে না, কাজেই সরকারের অগোচরে বেআইনী কোন কাজে (যেমনঃ জঙ্গীবাদ, হুন্ডি বা মুদ্রপাচারে)
৭। টাকা-পয়সা ব্যবহৃত হবার সুযোগ থাকবে না; সরকারী তথ্যসমূহ অনলাইনে বিনিময়ের ক্ষেত্রে ফাঁস হবার কোন
সুযোগ থাকবে না;
৮। তথ্য বিনিময়ের সকল পর্যায়ে স্ট্যাটাস ট্র্যাক করা যাবে, ফলে সাইবার অপরাধের তদন্ত সহজ হবে।