লিট বাংলা ডট টেক, প্রযুক্তির হাতেখড়ি হোক বাংলাতেই।

হ্যাকিং / সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বাংলা প্রযুক্তির ব্লগ

টাইম মেগাজিনে যাকে পাগল বলে অভিহিত করেছিল ,জীবন যেন একটি চকলেটের বাক্স- জ্যাক মা

প্রত্যাখ্যানের পর প্রত্যাখ্যানই দেখেছি আমি।।।হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ১০বার আবেদন করে।১০বারই প্রত্যাখ্যাত হয়েছি ।

এতক্ষণ যার কথা বলেছি তিনি হলেন পৃথিবীর অন্যতম বড়।অনলাইন ভিত্তিক কম্পানি আলিবাবা ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জ্যাক মা৷তার জন্ম চীনের জিজিয়াং প্রদেশে৷





ফোবর্স
ম্যাগাজিনের হিসেবে জ্যাক মা পৃথিবীর ৩৩ তম ধনী ব্যক্তি৷তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার৷
জ্যাক মার জীবনে এতবার ব্যার্থ হওয়ার পরও বড় হওয়ার,প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা থেকে বিন্দু মাত্র
পিছপা হন নি৷


অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে তিনি আজকের অবস্থানে এসেছেন৷যেই জ্যাক মা চাকরির জন্য ৩০ বার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন সেই জ্যাক মার প্রতিষ্ঠান আলিবাবা ডটকম চীনে নতুন করে ১৪ মিলিয়ন চাকরি তৈরি করেছে৷



সমস্যা, সমাধান, সুযোগ এবং নতুনভাবে শুরু করার গল্প


ই-কমার্সের বিশাল সাম্রাজ্যে জায়ান্টদের মধ্যে অন্যতম ই-কমার্স ওয়েবসাইট আলিবাবা শুরু করার বছর পাঁচেক আগেও জ্যাক মা ইন্টারনেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম ইন্টারনেট নামক মাধ্যমের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন। ১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানে এক বন্ধুর সহযোগিতায় ইন্টারনেটের প্রথম পাঠ নেন। সেসময় তিনি ইন্টারনেটে ‘বিয়ার’ লিখে সার্চ দিয়ে যে সমস্ত তথ্য পান, তার মধ্যে বিভিন্ন দেশের ওয়েবসাইটের অবদান থাকলেও নিজ দেশ থেকে কোনো অবদান তার চোখে পড়েনি। এমনকি তার নিজের দেশের তথ্য ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েও না পেয়ে বেশ মনঃক্ষুণ্ণ হন জ্যাক। পরে নিজেই এক বন্ধুর সহযোগিতায় একটি সাধারণ ওয়েবসাইট তৈরি করেন। ওয়েবসাইটটি প্রকাশ করার মাত্র ঘণ্টা পাঁচেকের মধ্যে তিনি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পান। এটিই মূলত ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা করার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে তার জন্য।



সে বছরই জ্যাক তার স্ত্রী জ্যাং ইং এর সহযোগিতায় বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে প্রায় বিশ হাজার ইউএস ডলার সংগ্রহ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একজন বন্ধুর সহযোগিতায় china yollow page নামের একটি কোম্পানি তৈরি করেন। তাদের মূলত কাজ ছিল চীনের বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে দেয়া, যদিও জ্যাক প্রোগ্রামিং এর কিছুই জানতেন না। মাত্র তিন বছরের মধ্যে সেই কোম্পানি প্রায় আট লক্ষ ইউএস ডলারের মতো মুনাফা লাভ করে। এই পরিমাণটা সেই সময়ের তুলনায় অনেক বিশাল ছিল।

সে সময়ের কথা বলতে গিয়ে জ্যাক জানান, ওয়েবের সাথে সংযুক্তির পর দিনদিন চারপাশ বদলাতে থাকে। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ অনেক ধীর গতির হওয়ায় একটি ওয়েব পেজ লোড হতেই অধিকাংশ সময় ঘণ্টা তিনেকের মতো প্রয়োজন হতো। ঐ সময়টা অতিবাহিত করার জন্য আমি আমার বন্ধুদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দিতাম। টিভি দেখে, তাস খেলে, মাতাল হওয়ার মাধ্যমে সময়টা বেশ কেটে যেত।



২০০৩ সালে Taobao Marketplace, Alipay, Ali Mama এবং Lynx নামের চারটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এর মধ্যে টাওবাও মার্কেটপ্লেস বেশ দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। সে সময় বর্তমান বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তর ই-কমার্স কোম্পানি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করা ebay থেকে আলিবাবাকে কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু জ্যাক মা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং ইয়াহুর সহ-প্রতিষ্ঠাতা Jerry Yang থেকে পাওয়া এক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে থাকেন। তার সঠিক সিদ্ধান্ত, বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ এবং হাল ছেড়ে না দেয়ার ফলাফল হিসেবে আলিবাবা বর্তমানে  বিজনেস-টু-বিজনেস, বিজনেস-টু-কাস্টমার এবং কাস্টমার-টু-কাস্টমার সার্ভিস দেয়া কয়েকশ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।


অনুপ্রেরণায় জ্যাক মা



জ্যাক মার মতে, “আপনি যদি হাল ছেড়ে না দেন, তাহলে সামনে জয়ী হওয়ার আরো সুযোগ পাবেন।” তিনি আরো বলেন, “যদি আপনি চেষ্টাই না করেন, তাহলে কীভাবে বুঝবেন কোনো সুযোগ আছে কি নেই?” অর্থাৎ তিনি হাল ছেড়ে না দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে বলেছেন। এক জায়গায় ব্যর্থ হলেও, আরেক জায়গায় চেষ্টা করার কথা বলেছেন। তিনি বারবার ধৈর্য ধারণ করার কথা বলেছেন। নিজের পছন্দের কাজের প্রতি আসক্ত হবার কথা বলেছেন। ছোট ছোট কাজ দ্বারা এগিয়ে যাবার মাধ্যমে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখতে উৎসাহী করেছেন।