লিট বাংলা ডট টেক, প্রযুক্তির হাতেখড়ি হোক বাংলাতেই।

হ্যাকিং / সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বাংলা প্রযুক্তির ব্লগ

মেমোরি কার্ড কীভাবে বাইনারিতে তথ্য সংরক্ষিত করে

মানুষ এবং কম্পিউটার মেমোরির মধ্যে একটি সদৃশ হলো, এদের উভয়েরই দুই প্রকারের মেমোরি রয়েছে। 
মানুষের মেমোরি প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে, -একটি হলো সর্ট টার্ম মেমোরি যা আপনি সম্প্রতি দেখেছেন, শুনেছেন, অথবা মস্তিষ্কে কল্পনা করেছেন এবং আরেকটি হলো - লং টার্ম মেমোরি যা আমরা শিখেছি, বা আমাদের জীবন থেকে অভিজ্ঞতা নিয়েছি, আর এই জন্যই এগুলো আমাদের বেশি ভালো করে মনে থাকে।





সাধারনত, কম্পিউটারের ইন্টারনাল মেমোরি উদ্বায়ী (যা দ্রুত উবিয়ে যায়) হয়ে থাকে—অর্থাৎ কম্পিউটার বন্ধ করার সাথে সাথেই এর মধ্যে সংরক্ষিত সকল তথ্য গায়েব হয়ে যায়। আর এর জন্যই কম্পিউটারের আরেক প্রকার মেমোরির প্রয়োজন পড়ে, যাকে সহায়ক মেমোরি বা স্টোরেজ বলা হয়। এই মেমোরি, কম্পিউটার অফ থাকা অবস্থায়ও কোন তথ্য মনে রাখতে 
পারে। সাধারন পিসি বা ল্যাপটপে হার্ডড্রাইভ বা ফ্ল্যাশ স্টোরেজকে সহায়ক মেমোরি হিসেবে দেখতে পাওয়া যায়। সহায়ক মেমোরিকে আবার এক্সটারনাল মেমোরিও বলা হয়ে থাকে, কেনোনা হার্ডড্রাইভ আরেকটি আলাদা মেশিন হয়ে থাকে যা তারের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করা থাকে। আবার আজকের মডার্ন কম্পিউটার গুলোর সাথে প্লাগইন সহায়ক মেমোরি দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ইউএসবি ফ্ল্যাশ মেমোরি স্টিক বা এসডি মেমোরি কার্ড,পোর্টআবোল হার্ডড্রাইভ,সিডি বা ডিভিডি রম, ইত্যাদি।

কম্পিউটারের প্রধান মেমোরি কিন্তু অনেক কম হয়ে থাকে, সাধারনত ৫১২ এম্বি থেকে ৮ জিবি পর্যন্ত (মডার্ন কম্পিউটার গুলোতে আরো মেমোরি থাকে)। কম্পিউটারে যতোবেশি প্রধান মেমোরি থাকবে, কম্পিউটার ততোবেশি তথ্য প্রসেস করতে পারবে এবং দ্রুতগতিতে কাজ করতে সক্ষম হবে। যদি কম্পিউটারের এর প্রধান মেমোরির চাইতেও বেশি তথ্য সংরক্ষন করার প্রয়োজন পড়ে তবে এটি হার্ডড্রাইভের কিছু ফাঁকা স্থানে তা সংরক্ষিত করে থাকে, আর একে ভার্চুয়াল মেমোরি বলা হয়।





কম্পিউটার মেমোরি—কোন ফটো, ভিডিও, মিউজিক বা যেকোনো কম্পিউটার তথ্যকে নাম্বার অথবা সংখ্যার রূপে সংরক্ষিত করে রাখে। আর এই জন্যই কম্পিউটারকে বলা হয় “ডিজিটাল কম্পিউটার“। আমরা মানুষেরা দশমিক সংখ্যা ব্যবহার করে কাজ করতে পছন্দ করি (০ থেকে ৯ পর্যন্ত ১০ টি সংখ্যা)। কিন্তু কম্পিউটার সম্পূর্ণ আলাদা সংখ্যা সিস্টেম ব্যবহার করে কাজ করে, আর একে বাইনারি সংখ্যা বলা হয়। বাইনারিতে শুধুমাত্র দুইটি সংখ্যা থাকে, জিরো (0) এবং ওয়ান (1)। 

দশমিক কোন সংখ্যাকে লেখার জন্য বাইনারিতে একাধিক সংখ্যার প্রয়োজন পড়ে। বাইনারি ডিজিট গুলোকে বিট বলা হয়—
অর্থাৎ এক একটি জিরো বা ওয়ান হলো এক একটি বিট। একসাথে আটটি বিটকে এক বাইট (byte) বলে।




আমরা মানুষেরা দশমিক নাম্বার ব্যবহার করতে পছন্দ করি তার একটি বড় কারন হলো আমাদের ১০টি আঙ্গুল রয়েছে। 


কিন্তু কম্পিউটারের ১০টি আঙ্গুল থাকে না। আঙ্গুলের বদলে কম্পিউটার মেমোরি তে থাকে কোটিকোটি ইলেক্ট্রনিক সুইচ, যাকে ট্র্যানজিস্টর বলা হয়ে থাকে। ট্র্যানজিস্টর গুলো কোন বাইনারি নাম্বার সংরক্ষন করে রাখতে পারে যখন এর ভেতর দিয়ে ইলেকট্রিক কারেন্ট প্রবাহ করানো হয়। কোন ট্র্যানজিস্টরকে সুইচ অন করালে এটি (1) নাম্বারকে সংরক্ষিত করে এবং অফ
 করালে (0) নাম্বারকে সংরক্ষিত করে।