কে আবিষ্কার করল এই বারকোড ?
নরম্যান জোসেফ উডল্যান্ড (ইংরেজি: Norman Joseph Woodland; জন্ম: ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২১ - মৃত্যু: ৯ ডিসেম্বর, ২০১২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্যে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান বিজ্ঞানী।ন. জোসেফ উডল্যান্ড এবং এন. জে. উডল্যান্ড নামেও তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন।
তিনি বিক্ষাত হয়েছেন বারকোড আবিষ্কার করে।
অনেকে বারকোড ও মোর্সকোড কে একই বলে থাকে, আসলে ব্যাপারটি ভুল, তবে এটি সত্য যে মোর্স কোড থেকেই বারকোড এর উৎপত্তি । ১৯৪৮ সালে উডল্যান্ডের ও বানার্র্ড সিলভার ২ জন একটি সুপারমার্কেটের ডিনের সাথে একটি বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসে তাদের বিষয় ছিল কিভাবে পণ্যের তথ্যাবলী স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষণ করা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু ডিন ব্যাপারটি এড়িয়ে যায় । উডল্যান্ড তার শিক্ষকতার চাকরী ছেড়ে দেন । এবং দাদার বাড়ি নিউ জার্সির আটলান্টিক সিটিতে চলে যান। সমুদ্রতীরে থাকার সময় তিনি মোর্স কোড সম্পর্কে জানতে পারেন । তিনিও বিন্দু এবং ড্যাশের মাধ্যমে মোর্স কোডের ন্যায় রেখা ব্যবহার করে তথ্য প্রেরণের জন্যে কাজ করতে থাকেন। হাতের আঙ্গুল প্রয়োগ করে সরু রেখা তৈরী করে বিন্দু এবং ড্যাশের মাধ্যমে দ্বি-মাত্রিক ধারণার সন্ধান পান যা পরবর্তীতে বারকোড নির্মাণে সহায়তা করে।
বারকোড কি?
বারকোড বর্তমান সময়ে একটা জনপ্রিয় পদ্ধতি। এর মাধ্যমে ছোট্ট একটা ছবির মধ্যে অনেক তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
বই , চিপস , চকলেট , বিস্কুট , কেক ,কাপড় বা প্রসাধনী সামগ্রীতেও সাদা একটি বক্সের ভিতরে লম্বা ডোরাকাটা দাগ দেখা যায়। দোকানের একটি যন্ত্র যা থেকে লেজারের একটি রশ্মি এই দাগগুলোকে পড়েই বলে দেয় আপনার ক্রয় করা পণ্যটির পরিচয় আর মূল্যমান।
কেন ব্যাবহার করা হয় ?
প্রশ্ন আসতে পারে তো এমন চিহ্নের কি দরকার, আগে তো দোকানের স্টিকারে কলম দিয়েই লেখা থাকত । কলম দিয়ে শুধু একবার পন্যের দামটি লেখবেন কিন্তু পরে যদি দাম বেড়ে যায় তখন?
সব পন্যের মধ্যে দাম পরিবর্তন করতে হবে ।
কিন্তু বারকোড সিস্টেমে একটি পন্যের কোড ইনপুট দিলেই সব হয়ে যায় যখন দাম বাড়ানোর তখন সহযেই কোড অনুযাইয়ী সকল পন্যের দাম পরিবর্তন করা যায় , এছাড়াও দোকানের প্রোডাক্টের সঠিক হিসাব ও এর মাধ্যমে রাখা সম্ভব ।
ফলে কোন পন্য চুড়ি হওয়া , নষ্ট হওয়ার হিসাব ঠিক ঠাক মত রাখা যায় ।
কিভাবে কাজ করে?
বারকোড রিড করার জন্য একটি লেজার বা এলইডি প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়, প্রশ্ন আসতে পারে তো এখানে তো ১,২,৩ এমন সংখ্যাও ব্যাবহার করা যেত , আসলে এমন সঙ্খ্যার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ভুল হওয়ার সম্ভাব্যতা বেড়ে যায় , তাই এই প্রসেস, এটি নিখুত এবং এতে ভুল হয়না বললেই চলে ।
আপনি যদি একটি বারকোড দেখেন এর আগামাথা কিছুই বুঝতে পারবেন না। কোথায় এর শুরু কোথায়-ই বা সংখ্যা। কিন্তু এটা কিন্তু খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। নাম্বারের জন্য প্রত্যেক পণ্য সমপরিমাণ জায়গা পায়, আড়াআড়ি ভাবে সাতটি ফাকা স্থান একটি পণ্যের পরিচয় বহন করে। এই ফাকা স্থানগুলোকে সাদা কাল কিছু ডোরা দাগে পূর্ণ করা হয়। এই দাগগুলো ০-৯ সংখ্যা প্রকাশ করে।
বারকোড রিডারের লেজার রশ্মিটি প্রতিফলনের উপর নির্ভর করে স্ক্যানার বুঝতে পারে এটি সাদা অংশ না কালো অংশ। কারণ সাদা অংশ আলো সবথেকে বেশি প্রতিফলন করে আর কালো অংশ সবথেকে কম। স্ক্যানারের সাথে সংযুক্ত একটি ইলেকট্রনিক সার্কিট এই কোডকে বাইনারি অর্থাৎ ০ আর ১ রূপান্তরিত করে আর স্ক্যানারের সাথে থাকা কম্পিউটারে তা পাঠিয়ে দেয়। কম্পিউটার পণ্যকে চিহ্নিত করে, এটির বিক্রয় নিশ্চিত করে ।
এভাবেই বারকোড আমাদের বর্তমান জীবনে ব্যাবসা বানিজ্য অনেক সহজ করে দিয়েছে ।