একটি গল্প দিয়ে শুরু করি,
(গ্রীক মিথলজি অনুযায়ী) গ্রীক রাজা আগামেনন এর ছোট ভাই মেনালাউসের স্ত্রী রানী হেলেনের প্রেমে পরে ট্রয় নগরীর রাজপুত্র প্যারিস । ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২ রাজ্যের দ্বন্দ শুরু, রাজা আগামেনন ট্রয় নগরীর উপর আক্রমনের জন্য ১০০০ যুদ্ধ জাহাজের বিশাল বাহিনী গড়ে তুলল , ১০ বছর ধরে যুদ্ধ চললো। কিন্তু ট্রয় নগরীর বিশেষ কোন ক্ষতি হল না । অন্যতম কারন ছিল ট্রয় নগরীর অভেদ্য সীমানা প্রাচীর। এরপর রাজা অডিসিয়াস এর বুদ্ধিতে আগামেনন সূর্যদেবতার জন্য উপহার স্বরুপ ট্রয় নগরীতে বিশাল একটি কাঠের ঘোড়া উপহার দেয়। ট্রয়ের মানুষরা সরল মনেই উপহার গ্রহন করে নগরের ভিতরে ঘোড়াটি রাখল , ঘোড়াটির ভিতরে অপেক্ষা করছিল বেশ কয়েকজন গ্রীক সৈন্য , রাত হওয়ার পর তারা কাঠের ঘোড়ার ভিতর থেকে বেড় হয়ে ট্রয় নগরীর দরজা খুলে দেয় ফলে গ্রীক সৈন্যরা শহরে ঢুকে আক্রমন করে এবং সব কিছু ধংস করে দেয়।
(ঘটনাটি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে)
এইবার মনে প্রশ্ন আসতে পারে এই গল্প এইখানে কেনো, বলছি।
কম্পিউটার যারা ব্যাবহার করেন তারা একটি ভাইরাস সম্পর্কে হয়ত অবশ্যই জানেন , ভাইরাসটির নাম কিন্তু উপরের গল্প থেকেই এসেছে। কারন এটি অনেকটা আপনার ইচ্ছাতেই আপনার পিসি তে প্রবেশ করবে এবং আপনার অজান্তেই আপনার কম্পিউটারে আক্রমন করে নিয়ন্ত্রন নিয়ে ফেলবে ।
অনেকটা ট্রয় নগরীর সেই ঘোড়ার মতো, এর জন্যই ভাইরাসটির নাম ট্রোজান হর্স ।
উপর থেকে ভাইরাস বললেও আসলে ভাইরাস ও ট্রোজানে আছে কিছু স্বাধারন পার্থক্য-
ভাইরাসটা একটু অন্যরকম । ভাইরাসের মূল সংজ্ঞা হলো এটা এমন একটা সফটওয়্যার, যা নিজেকে নিজে কপি করতে পারে, এবং নিজে থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়াতে পারে। কিছু ভাইরাস অন্য প্রোগ্রামের সাথে মিশে যায় (infection) এবং ছড়িয়ে ভেজাল বাধায়।
পার্থক্য হলো, ট্রোজান কিন্তু নিজেকে নিজে কপি করছে না। ট্রোজান নিজে থেকে ছড়ায়ও না। তাকে ঘরে আমরাই ডেকে এনে নিজেদের তেরোটা বাজাই। আবার ভাইরাস আমাদের তেরটা বাজায় তথ্য নষ্ট করে। সেটা অন্য কারো কাছে পাঠানোর ঝামেলায় যায় না।
ট্রোজান থেকে রক্ষা পেতে করণীয়ঃ
ট্রোজান এর হাত থেকে বাঁচতে হলে sandbox ব্যবহার করা যায় কিছু ক্ষেত্রে। sandbox ব্যবহার করলে ঘোড়াটাকে একটা আলাদা বাক্সে ভরে ফেলা হয় বলা যায়। সেই বাক্সে যাই করা হোক, ঘোড়া আর বার হতে পারে না। এছাড়া এন্টি ভাইরাস ও এর বিরুদ্ধে বেশ কার্যকরীতা দেখাতে পারে।
সাবধান থাকলে, এবং কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করার আগে সেটা নিয়ে একটু ঘাটা ঘাটি করলে ওয়েবে সেটার নিরাপত্তা সমন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।