পৃথিবীর পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে রহস্য । প্রতিটি অংশেই রয়েছে বিজ্ঞানের ছোয়া , বিজ্ঞানের একটি চমৎকার বিষয় হল গনিত । আর যদি বলি পৃথিবী এমনকি মহাবিশ্বের প্রায় প্রতিটি অংশেই গনিত ছড়িয়ে আছে তাহলে কি অবাক হবেন? এখন বলব গনিতের একটি রহস্যময় অংশ নিয়ে যা হচ্ছে সোনালী অনুপাত বা স্বর্গীয় অনুপাত , ইংরেজীতে যা হল Golden Ratio । প্রায় আড়াইহাজার বছর আগে পিথাগোরাস , ইউক্লিড , ফিবোনাচ্চি , কেপলার ,পিসা ,রাজা পেনরোজ সহ অসংখ্য বিজ্ঞানী এই সোনালী অনুপাত নিয়ে কাজ করেছেন। এরা সবাই এই অনুপাত কে খুজে পেয়েছেন সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টির অসংখ্য অংশে। প্রকৃতি , মহাকাশ সকল অংশেই যেন এই সংখ্যা বিরাজমান ।
এই সংখ্যাটি শুধু মাত্র যে গনিতবিদরা ব্যাবহার করেছে তাই নয় , এই অনুপাতের ব্যাবহার করেছে বিক্ষ্যাত চিত্রশিল্পী , স্থপতি , ভাষ্কর সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ । এতক্ষন ধরে সোনালী অনুপাত নিয়ে কথা বললেও অনুপাতটি বলা হয়নি। ১.৬১৮০৩৩৮৮...... হল সোনালী অনুপাত। আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাতের মান যদি ১.৬১৮ এই রকম হয় তবে এর মধ্যে সোনালী অনুপাত আছে বলা হয় । যেহেতু এটি ২ টি বাহুর অনুপাত তাই এটি এর মান ঋনাত্বক বা শূন্য হয় না কখনোই । ল্যাটিন Φ (PHI/ ফাই ) দ্বারা একে প্রকাশ করা হয়।
গণিতবিদ ইউক্লিড তার ‘এলিমেন্টাস’ গ্রন্থে প্রথম PHI এর জ্যামেতিক ব্যখ্যা দেন । তিনি কোন একটি সরলরেখার উপর এমন একটি বিন্দু কল্পনা করেন ( যাকে বলা হয় গোল্ডেন পয়েন্ট ) যাতে রেখাটি এরকম অনুপাতে বিভক্ত হয় যে, ছোট অংশ/বড় অংশ = বড় অংশ/সম্পূর্ণ অংশ । এবং সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে সবসময় উপরের এই অনুপাতের মান হবে 1.6180… : 1 (PHI:1)
গোল্ডেন রেশিও ২ ভাবে প্রকাশ হয় Golden Rectangle এবং Golden Spiral।
গানিতিক হিসাব না হয় অন্য একসময় বুঝাবো আজকে শুধু ঘটনাতেই থাক। PHI এর সাথে কিন্তু ফিবনোচ্চি সিরিজেরও গভীর সম্পর্ক রয়েছে , গনিত বই এ ধারার অংক করার সময় হয়ত ফিবোনাচ্চি সিরিজের সাথে পরিচয় হয়েছে । 1,1,2,3,5,8,13,21,34,55,89,144…………এটি একটী অসীম ধারা এবং এর বিশেষত্ব হল এর প্রতিটা পদ আগের দুই পদের যোগফল। ধারার প্রথম ২-৩ টা সংখ্যা গোনায় না ধরে
এই ধারার যেকোন সংখ্যা দিয়ে পরের সংখ্যা ভাগ দিলে ১.৬১ পাওয়া যায় যা হল সোনালী অনুপাত, প্রথমেই সোনালী অনুপাতের আরেকটী নাম বলেছিলাম তা হচ্ছে স্বর্গীয় অনুপাত, ‘The Divine Proportion’ বা ‘ স্বর্গীয় অনুপাত’ নাম করনটি করেছিল বিক্ষ্যাত চিত্র শিল্পী ও বিজ্ঞানী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি , তাকে বলাহত গোল্ডেন রেশিও মাস্টার । তার কারন তিনিই প্রথম মানবদেহে PHI এর উপস্থিতি লক্ষ করেন ; বুঝতে পারেন এর মর্ম ( তিনি মৃত মানুষের দেহের বাইরের ও ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অনেক গবেষণা করতেন । আমরা ডাক্তারের চেম্বারে যেসব মানুষের অঙ্গের ছবি দেখি সেগুলো প্রথম ভিঞ্চিই ডিজাইন করেছিলেন )।
মানব দেহে সোনালী অনুপাতের উপস্থিতিঃ
মানব দেহের অসংখ্য যায়গায় পাওয়া যায় এই অনুপাত , নাভির নিচ থেকে বাকি অংশের দৈর্ঘ্য = 1.6180…(PHI) ; আবার কাঁধ থেকে হাটু পর্যন্ত এবং হাটু থেকে পায়ের আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত দূরত্বের অনুপাত ও 1.6180…(PHI) ; মানুষের বাহু(বাইসেপ্স) এর সাথে সম্পূর্ণ হাত এর অনুপাতের মান হল 1.6180…(PHI); মানুষের আঙ্গুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই এর দৈর্ঘ্য এবং কবজি থেকে কনুই এর দৈর্ঘ্যের অনুপাত 1.6180…(PHI) ; মানুষের মুখমণ্ডলের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 1.6180…(PHI) ; ঠোঁটের দৈর্ঘ্য ও নাকের প্রস্থের অনুপাত , চোখের ২ প্রান্তের দুরুত্ব ও চুল থেকে চোখের মনির দুরুত্ব ও 1.6180…(PHI) ।সারা মুখমন্ডলের সবকিছুতে , শরীরের গিঁটে গিঁটে , মেরুদন্ডে , অভ্যন্তরের অঙ্গেপ্রত্যঙ্গে সবখানে এই PHI খুঁজে পাওয়া যাবে । গোটা মানবদেহে প্রায় ৩ শতাধিক Golden Ratio (PHI) খুঁজে পাওয়া যায় ; মুখমণ্ডলেই পাওয়া যায় ৩০ টিরও বেশি । মনোবিজ্ঞানীরা নাকি মানবমনের সাথেও এর সম্পর্ক নির্ণয় করেছে।
প্রকৃতিতে সোনালী অনুপাতঃ
গোটা প্রানীকুলে-উদ্ভিদকুলে সব কিছুতেই মাত্রাগত ভাবে PHI বিদ্যমান ।সূর্যমুখী ফুলের পাপড়ি ১.৬১৮ অনুপাতে বৃদ্ধি পায়। মৌচাকে স্ত্রী মৌমাছি ও পুরুষ মৌমাছির সংখ্যার অনুপাত PHI । ফুলের ভেতর প্রতি স্তরের রেনুর সাথে পরের স্তরের রেনুর অনুপাত PHI । গাছের প্রতি স্তরে স্তরে পাতা বৃদ্ধির অনুপাত PHI । শামুক-ঝিনুক-সী-শেল এর স্পাইরালেও কোন-না-কোনভাবে PHI রয়েছে , মাছের ঝাক , বন্য প্রানীর শিকার , সব কিছুতেই বিদ্যমান এই অনুপাত। চৌম্বকক্ষেত্র কিংবা বিদ্যুৎক্ষেত্রে ,সরল ছন্দিত স্পন্দনে , তাপবিজ্ঞানে সবখানেই পাওয়া যায় PHI
এই সংখ্যাটি শুধু মাত্র যে গনিতবিদরা ব্যাবহার করেছে তাই নয় , এই অনুপাতের ব্যাবহার করেছে বিক্ষ্যাত চিত্রশিল্পী , স্থপতি , ভাষ্কর সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ । এতক্ষন ধরে সোনালী অনুপাত নিয়ে কথা বললেও অনুপাতটি বলা হয়নি। ১.৬১৮০৩৩৮৮...... হল সোনালী অনুপাত। আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাতের মান যদি ১.৬১৮ এই রকম হয় তবে এর মধ্যে সোনালী অনুপাত আছে বলা হয় । যেহেতু এটি ২ টি বাহুর অনুপাত তাই এটি এর মান ঋনাত্বক বা শূন্য হয় না কখনোই । ল্যাটিন Φ (PHI/ ফাই ) দ্বারা একে প্রকাশ করা হয়।
গণিতবিদ ইউক্লিড তার ‘এলিমেন্টাস’ গ্রন্থে প্রথম PHI এর জ্যামেতিক ব্যখ্যা দেন । তিনি কোন একটি সরলরেখার উপর এমন একটি বিন্দু কল্পনা করেন ( যাকে বলা হয় গোল্ডেন পয়েন্ট ) যাতে রেখাটি এরকম অনুপাতে বিভক্ত হয় যে, ছোট অংশ/বড় অংশ = বড় অংশ/সম্পূর্ণ অংশ । এবং সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে সবসময় উপরের এই অনুপাতের মান হবে 1.6180… : 1 (PHI:1)
গোল্ডেন রেশিও ২ ভাবে প্রকাশ হয় Golden Rectangle এবং Golden Spiral।
গানিতিক হিসাব না হয় অন্য একসময় বুঝাবো আজকে শুধু ঘটনাতেই থাক। PHI এর সাথে কিন্তু ফিবনোচ্চি সিরিজেরও গভীর সম্পর্ক রয়েছে , গনিত বই এ ধারার অংক করার সময় হয়ত ফিবোনাচ্চি সিরিজের সাথে পরিচয় হয়েছে । 1,1,2,3,5,8,13,21,34,55,89,144…………এটি একটী অসীম ধারা এবং এর বিশেষত্ব হল এর প্রতিটা পদ আগের দুই পদের যোগফল। ধারার প্রথম ২-৩ টা সংখ্যা গোনায় না ধরে
এই ধারার যেকোন সংখ্যা দিয়ে পরের সংখ্যা ভাগ দিলে ১.৬১ পাওয়া যায় যা হল সোনালী অনুপাত, প্রথমেই সোনালী অনুপাতের আরেকটী নাম বলেছিলাম তা হচ্ছে স্বর্গীয় অনুপাত, ‘The Divine Proportion’ বা ‘ স্বর্গীয় অনুপাত’ নাম করনটি করেছিল বিক্ষ্যাত চিত্র শিল্পী ও বিজ্ঞানী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি , তাকে বলাহত গোল্ডেন রেশিও মাস্টার । তার কারন তিনিই প্রথম মানবদেহে PHI এর উপস্থিতি লক্ষ করেন ; বুঝতে পারেন এর মর্ম ( তিনি মৃত মানুষের দেহের বাইরের ও ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অনেক গবেষণা করতেন । আমরা ডাক্তারের চেম্বারে যেসব মানুষের অঙ্গের ছবি দেখি সেগুলো প্রথম ভিঞ্চিই ডিজাইন করেছিলেন )।
মানব দেহে সোনালী অনুপাতের উপস্থিতিঃ
মানব দেহের অসংখ্য যায়গায় পাওয়া যায় এই অনুপাত , নাভির নিচ থেকে বাকি অংশের দৈর্ঘ্য = 1.6180…(PHI) ; আবার কাঁধ থেকে হাটু পর্যন্ত এবং হাটু থেকে পায়ের আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত দূরত্বের অনুপাত ও 1.6180…(PHI) ; মানুষের বাহু(বাইসেপ্স) এর সাথে সম্পূর্ণ হাত এর অনুপাতের মান হল 1.6180…(PHI); মানুষের আঙ্গুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই এর দৈর্ঘ্য এবং কবজি থেকে কনুই এর দৈর্ঘ্যের অনুপাত 1.6180…(PHI) ; মানুষের মুখমণ্ডলের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 1.6180…(PHI) ; ঠোঁটের দৈর্ঘ্য ও নাকের প্রস্থের অনুপাত , চোখের ২ প্রান্তের দুরুত্ব ও চুল থেকে চোখের মনির দুরুত্ব ও 1.6180…(PHI) ।সারা মুখমন্ডলের সবকিছুতে , শরীরের গিঁটে গিঁটে , মেরুদন্ডে , অভ্যন্তরের অঙ্গেপ্রত্যঙ্গে সবখানে এই PHI খুঁজে পাওয়া যাবে । গোটা মানবদেহে প্রায় ৩ শতাধিক Golden Ratio (PHI) খুঁজে পাওয়া যায় ; মুখমণ্ডলেই পাওয়া যায় ৩০ টিরও বেশি । মনোবিজ্ঞানীরা নাকি মানবমনের সাথেও এর সম্পর্ক নির্ণয় করেছে।
মানব মুখমন্ডলে সোনালী অনুপাত |
গোটা প্রানীকুলে-উদ্ভিদকুলে সব কিছুতেই মাত্রাগত ভাবে PHI বিদ্যমান ।সূর্যমুখী ফুলের পাপড়ি ১.৬১৮ অনুপাতে বৃদ্ধি পায়। মৌচাকে স্ত্রী মৌমাছি ও পুরুষ মৌমাছির সংখ্যার অনুপাত PHI । ফুলের ভেতর প্রতি স্তরের রেনুর সাথে পরের স্তরের রেনুর অনুপাত PHI । গাছের প্রতি স্তরে স্তরে পাতা বৃদ্ধির অনুপাত PHI । শামুক-ঝিনুক-সী-শেল এর স্পাইরালেও কোন-না-কোনভাবে PHI রয়েছে , মাছের ঝাক , বন্য প্রানীর শিকার , সব কিছুতেই বিদ্যমান এই অনুপাত। চৌম্বকক্ষেত্র কিংবা বিদ্যুৎক্ষেত্রে ,সরল ছন্দিত স্পন্দনে , তাপবিজ্ঞানে সবখানেই পাওয়া যায় PHI
ফুলের মাঝে সোনালী অনুপাত বিদ্যমান |
মানব স্থাপত্য ও শিল্পেঃ
বিক্ষ্যাত অনেক শিল্প , স্থাপত্যেও রয়েছে সোনালী অনুপাত , মিসরের পিরামিডে , আগ্রার তাজমহলে , ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারে , নটরডেমে, পারথেননে , ইউনাইটেড নেশন বিল্ডিং সহ আরও অজস্র স্থাপত্যে PHI ব্যবহৃত হয়েছে। বিক্ষ্যাত ছবি মোনালিসা, ম্যাডোনা অফ রকস ,দ্যা লাস্ট সাপার , ভিট্রভিয়ান ম্যান প্রভৃতি শিল্পেও পাওয়া গেছে সোনালী অনুপাত। কিছু বিখ্যাত কোম্পানির লোগোতে কি করে PHI ব্যবহৃত হয়েছে ।
বিক্ষ্যাত স্থাপত্যেও রয়েছে গোল্ডেন রেশিও |
মহাবিশ্বে সোনালি অনুপাতঃ
হারিকেন ,ঘূর্ণিঝড় , ধোঁয়ার কুণ্ডলী সবসময়ই Golden Spiral অনুসরন করে বৃদ্ধি পায়। এমনকি গ্যালাক্সি গুলোও Golden Spiral অনুসরন করে বিস্তৃত হয় । আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলোর সূর্যের চারপাশে আবর্তনকালও PHI অনুসরনে চলে। শনি গ্রহের বলয়ের ক্ষেত্রেও বাহিরের উজ্জ্বল বলয় ও ভেতরের অন্ধকার বলয় এর অনুপাত PHI ।
ঘুর্নিঝর ও ছায়াপথেও সোনালী অনুপাত |
মোটামোটি ছোট করে অনেক কিছুই বলে ফেললাম , সোনালী অনুপাত নিয়ে অসংখ্য গবেষনা হয়েছে , জীবনে প্রতিটি অংশে এর উপস্থিতির জন্যই এর আরেক নাম হচ্ছে Number of Life .
এখানে Fibonacci এর উচ্চারন ফিবোনাচ্চি করা হয়েছে , বেশ কিছু বই এ ফিবোনাক্কি পড়েছিলাম , তবে ফিবোনাচ্চি বেশী জায়গায় পেয়েছি। গোল্ডেন রেশিও নিয়ে অল্প কিছু লেখা রয়েছে ড্যান ব্রাউনের দ্যা ভিঞ্চি কোড বইটিতে , ক্রিপ্টোগ্রাফি ও সিম্বলজি নিয়ে আগ্রহ থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন মজাদার এই বইটি , আর হ্যা ক্রিপ্টোগ্রাফি নিয়ে যদি কিছু জানতে চান তাহলে ঘুড়ে আসুন এই লিংক থেকে ।
এখানে Fibonacci এর উচ্চারন ফিবোনাচ্চি করা হয়েছে , বেশ কিছু বই এ ফিবোনাক্কি পড়েছিলাম , তবে ফিবোনাচ্চি বেশী জায়গায় পেয়েছি। গোল্ডেন রেশিও নিয়ে অল্প কিছু লেখা রয়েছে ড্যান ব্রাউনের দ্যা ভিঞ্চি কোড বইটিতে , ক্রিপ্টোগ্রাফি ও সিম্বলজি নিয়ে আগ্রহ থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন মজাদার এই বইটি , আর হ্যা ক্রিপ্টোগ্রাফি নিয়ে যদি কিছু জানতে চান তাহলে ঘুড়ে আসুন এই লিংক থেকে ।